সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Samsung Galaxy M21

 


Samsung Galaxy M21
 

পরিচিতি

বাজারে বাজেট স্মার্টফোনের প্রতিযোগিতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। সেই প্রতিযোগিতায় Samsung-এর M সিরিজ বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে, বিশেষ করে Galaxy M21 মডেলটি। ২০২০ সালে রিলিজ হলেও আজও অনেক ব্যবহারকারীর মধ্যে এই ফোনটির চাহিদা বিদ্যমান, কারণ এর ব্যাটারি, ডিসপ্লে, Microphone, Speaker ও মূল্য-অনুপাতে পারফরম্যান্স এখনো অনেক ফোনের চেয়ে ভাল। 


১. ডিভাইসের স্পেসিফিকেশন – দ্রুত নজর

বৈশিষ্ট্যবিবরণ
চিপসেটExons 9611 (10nm)
CPUOcta-core "(4x2.3 GHz  & 4x1.7 GHz)"
GPUMali-G72 MP3
RAM4GB / 6GB
ROM64GB / 128GB (UFS 2.1)
ব্যাটারি6000 mAh (15W Fast Charging)
ডিসপ্লে6.4” Super AMOLED, FHD+
অপারেটিং সিস্টেমAndroid 10 (One UI 2.0), আপডেটযোগ্য

২. প্রসেসর ও চিপসেট পারফরম্যান্স

Samsung Galaxy M21-এ ব্যবহৃত Exons 9611 চিপসেটটি একটি ১০ ন্যানোমিটার আর্কিটেকচারে নির্মিত মিড-রেঞ্জ প্রসেসর। এতে রয়েছে ৮টি কোর – যার ৪টি পারফরম্যান্স কোর (Cortex-A73) ও ৪টি পাওয়ার-এফিশিয়েন্ট কোর (Cortex-A53)।

পারফরম্যান্স:

  • দৈনন্দিন ব্যবহারে: ফোনটি সাধারণ ব্রাউজিং, ভিডিও দেখা, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার, WhatsApp, Facebook বা Instagram-এর মতো অ্যাপে চমৎকারভাবে পারফর্ম করে।

  • মাল্টিটাস্কিং: ৬ জিবি র‍্যাম সংস্করণে একসাথে অনেক অ্যাপ খোলা থাকলেও ফোনটি খুব একটা স্লো হয় না। RAM management মোটামুটি ভালো।

  • তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ: অনেক সময় ব্যবহারেও ফোনটি অতিরিক্ত গরম হয় না, যা Exynos 9611-এর উন্নত হিট ম্যানেজমেন্টের প্রমাণ।


৩. গেমিং পারফরম্যান্স

গেমার ভাইদের জন্য ফোনের GPU ও প্রসেসরের সমন্বয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। Galaxy M21-এ রয়েছে Mali-G72 MP3 GPU।

PUBG Mobile / BGMI:

  • গ্রাফিক্স: Balanced + Medium সেটিং-এ ভালোভাবে খেলা যায়।

  • ফ্রেমরেট: ৩০FPS এর কাছাকাছি পাওয়া যায়, তবে occasional frame drops হতে পারে।

  • তাপমাত্রা: ৩০ মিনিটের বেশি খেলার পর হালকা গরম হয়, কিন্তু তেমন অস্বস্তিকর নয়।

Call of Duty:

  • Low to Medium গ্রাফিক্সে খেলা যায়, এবং smoother gameplay পাওয়া যায়।

Free Fire / Asphalt 9:

  • এগুলো অনায়াসে খেলা যায়। লো বা মিড সেটিং-এ smooth performance।

উপসংহার: গেমিং পারফরম্যান্স "দ্রুতগামী" নয়, তবে বাজেট ফোন হিসেবে ভালোই বলা চলে।


৪. ইউজার ইন্টারফেস এবং সফটওয়্যার পারফরম্যান্স

Samsung Galaxy M21 এসেছে One UI Core 2.0 সহ, যা পরবর্তীতে One UI 4.1 পর্যন্ত আপডেট পেয়েছে (Android 12)।

One UI-এর সুবিধা:

  • সুন্দর, ক্লিন ও ইউজার-ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস

  • অ্যাড বা বাল্ক অ্যাপ নেই

  • Dark Mode, Digital Wellbeing, Secure Folder-এর মত ফিচার

পারফরম্যান্স:

  • হোম স্ক্রিন থেকে অ্যাপ লোডিং, স্লাইডিং সবকিছুই ফ্লুইড

  • এনিমেশনগুলো মসৃণ

  • মাঝে মাঝে সামান্য ল্যাগ অনুভব হতে পারে পুরানো Android ভার্সনে, তবে আপডেটের পর তা অনেকটাই ঠিক হয়েছে


৫. স্টোরেজ ও ফাইল ম্যানেজমেন্ট

Galaxy M21-এ আছে UFS 2.1 স্টোরেজ, যা eMMC স্টোরেজের তুলনায় অনেক দ্রুতগতির। এর ফলে:

  • অ্যাপ ইনস্টলেশন দ্রুত হয়

  • বড় ফাইল কপি করতে সময় কম লাগে

  • ক্যামেরার ছবি দ্রুত প্রসেস হয়

৪/৬ জিবি র‍্যাম এর সাথে ৬৪/১২৮ জিবি স্টোরেজের সমন্বয়ে এই ফোনে স্টোরেজ পারফরম্যান্স যথেষ্ট ভালো।


৬. ব্যাটারি ও পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট

এই ফোনের অন্যতম বড় আকর্ষণ হলো এর 6000mAh বিশাল ব্যাটারি

বাস্তব ব্যবহার অনুযায়ী ব্যাটারি পারফরম্যান্স:

  • লাইট ইউজারে: ২ দিন অবধি চার্জ থাকে

  • হেভি ইউজারে (ভিডিও + গেমিং): ১.৫ দিন অনায়াসে চলে

  • স্ক্রিন অন টাইম (SOT): ৮-১০ ঘন্টা অবধি পাওয়া যায়

চার্জিং:

  • ১৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং কিছুটা ধীরগতির (পুরো চার্জ হতে ২.৫ ঘণ্টা)

  • তবে Samsung-এর ব্যাটারি অপ্টিমাইজেশন ভালো হওয়ায় দীর্ঘস্থায়ী ব্যাকআপ মেলে


৭. ডিসপ্লে পারফরম্যান্স

পারফরম্যান্স মানে শুধু প্রসেসর নয়, ডিসপ্লের পারফরম্যান্সও গুরুত্বপূর্ণ। Galaxy M21-এ রয়েছে 6.4 ইঞ্চি Full HD+ Super AMOLED ডিসপ্লে

  • ব্রাইটনেস: দিনে বাইরে ব্যবহারযোগ্য

  • কালার একিউরেসি: খুবই ভালো, Netflix/YouTube দেখার জন্য পারফেক্ট

  • টাচ রেসপন্স: খুব স্মুথ, গেম খেলতে সমস্যা হয় না


৮. ক্যামেরা পারফরম্যান্স (সংক্ষিপ্ত)

যদিও বিষয়টি পারফরম্যান্স এর মধ্যে পড়ে না পুরোপুরি, তবে প্রসেসিং স্পিড ও ইমেজ প্রসেসিংও একটি পারফরম্যান্স ফ্যাক্টর।

  • মেইন ক্যামেরা: ৪৮MP, ভালো ছবি তোলে, তবে রাতের বেলায় একটু সফট

  • ফ্রন্ট ক্যামেরা: ২০MP, সেলফি ভালো, HDR ঠিকঠাক কাজ করে

  • প্রসেসিং টাইম: ছবি তোলার পর প্রিভিউ একটু দেরিতে লোড হতে পারে


৯. অন্যান্য পারফরম্যান্স ফ্যাক্টর

সিগন্যাল ও কল কোয়ালিটি:

  • ভালো নেটওয়ার্ক ক্যাপচার করে

  • VoLTE ও VoWiFi সাপোর্ট করে

  • কল ড্রপ বা ডিলে সাধারণত দেখা যায় না

সেন্সর সাপোর্ট:

  • ফিঙ্গারপ্রিন্ট (পিছনে), মুখের মাধ্যমে আনলক

  • জাইরোস্কোপ, এক্সিলেরোমিটার ইত্যাদি রয়েছে

  • সেন্সর রেসপন্স যথেষ্ট ভালো

স্পিকার ও অডিও:

  • মনো স্পিকার, মাঝারি লাউড

  • 3.5mm হেডফোন জ্যাকের মাধ্যমে ভালো কোয়ালিটির সাউন্ড শুনা যায়


১০. বেন্চমার্ক স্কোর (তুলনামূলক)

অ্যাপস্কোর
AnTuTu~185,000
Geekbench (Single Core)~350
Geekbench (Multi Core)~1300
3DMarkLow Graphics Score (~600)

বলা চলে, Exons 9611 চিপসেট বাজেট রেঞ্জের জন্য ভাল।


উপসংহার: 

পারফরম্যান্সের দৃষ্টিকোণ থেকে Galaxy M21 অনেক ভালো । Samsung Galaxy M21 এর পারফরম্যান্স এবং Quality অনুযায়ী এখনো অনেক ফোনের চেয়ে এগিয়ে। যারা গেমিং হেভি করেন না, বা যারা একটি ভালো ডিসপ্লে, বিশাল ব্যাটারি, এবং নির্ভরযোগ্য পারফরম্যান্স চান — তাদের জন্য এটি এখনো একটি উপযুক্ত ফোন।

মন্তব্যসমূহ

Most Popular Post

৫০০ ওয়াট বাল্ব: এক শক্তিশালী আলোর উৎসের পর্যালোচনা

  ৫০০ ওয়াট বাল্ব: এক শক্তিশালী  আলোর উৎসের পর্যালোচনা আলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। আধুনিক সভ্যতায় আমরা বিভিন্ন ধরনের আলোর উৎস ব্যবহার করে থাকি—যেমন ইনসানডেসেন্ট ল্যাম্প, ফ্লুরোসেন্ট টিউব, LED লাইট ইত্যাদি। এসবের মধ্যে ৫০০ ওয়াটের বাল্ব একটি বিশেষ ধরণের আলো যার ব্যবহার মূলত শিল্পখাতে, স্টুডিওতে, অথবা বড় পরিসরের আলোকসজ্জায় হয়ে থাকে। এ প্রবন্ধে আমরা ৫০০ ওয়াট বাল্বের গঠন, কার্যকারিতা, ব্যবহার, উপকারিতা ও অসুবিধাসমূহ নিয়ে বিশদ আলোচনা করব। বাল্বের গঠন ও প্রকারভেদ ৫০০ ওয়াটের বাল্ব সাধারণত ইনসানডেসেন্ট বা হ্যালোজেন টাইপ হয়ে থাকে। এই বাল্বের ভেতরে টাংস্টেন ফিলামেন্ট থাকে, যা বিদ্যুৎ প্রবাহিত হলে প্রচণ্ড উত্তপ্ত হয় এবং তাপ ও আলো উৎপন্ন করে। হ্যালোজেন বাল্বগুলিতে হ্যালোজেন গ্যাস (যেমন ব্রোমিন বা আয়োডিন) ব্যবহার করা হয়, যা ফিলামেন্টের আয়ু বাড়ায় এবং আলোকে আরও উজ্জ্বল করে। বর্তমানে LED প্রযুক্তির উন্নতির ফলে বাজারে ৫০০ ওয়াট সমতুল্য LED বাল্বও পাওয়া যায়, যা অনেক কম বিদ্যুৎ খরচে একই পরিমাণ আলো দিতে পারে। আলোর ক্ষমতা একটি সাধারণ ৫০০ ওয়াট ইনসানডেসেন্ট বাল্ব প্রায় ৯৫০০ থেক...

৭ ওয়াট বাল্ব: পরিবেশ বান্ধব

৭ ওয়াট বাল্ব: পরিবেশ বান্ধব একটি স্মার্ট বিকল্প বর্তমান বিশ্বে পরিবেশ সংরক্ষণ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। বৈশ্বিক উষ্ণতা, কার্বন নিঃসরণ, জ্বালানির অপচয় এবং বৈদ্যুতিক শক্তির অপর্যাপ্ততা আমাদেরকে বাধ্য করছে আরও বেশি টেকসই এবং পরিবেশ-বান্ধব পণ্য ব্যবহারের দিকে ঝুঁকতে। এই প্রেক্ষাপটে আলো সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত একটি সাধারণ কিন্তু অত্যন্ত কার্যকর উপায় হলো ৭ ওয়াটের এলইডি বাল্ব। যদিও এই ছোট বাল্বটি দেখতে সাধারণ, তবুও এর উপকারিতা অনেক বড়। এটি কেবল বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে না, বরং পরিবেশ রক্ষায় একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। এই প্রবন্ধে আমরা বিশদভাবে আলোচনা করব একটি ৭ ওয়াট বাল্ব কীভাবে পরিবেশের উপকার করে, এর কার্যকারিতা, তুলনামূলক বিশ্লেষণ, এবং ভবিষ্যতে টেকসই জীবনের জন্য এর ভূমিকা। ১. ৭ ওয়াট বাল্ব কী? ৭ ওয়াট বাল্ব বলতে সাধারণত একটি এলইডি (LED) বা লাইট এমিটিং ডায়োড প্রযুক্তি দ্বারা তৈরি বাল্ব বোঝায় যার বিদ্যুৎ খরচ মাত্র ৭ ওয়াট। এটি দিনে প্রায় ৮ ঘণ্টা ব্যবহারের জন্য গড়ে মাত্র ২ কিলোওয়াট ঘন্টা (kWh) বিদ্যুৎ ব্যবহার করে প্রতি মাসে। এলইডি বাল্বের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এটি অল্প বিদ্যুৎ খরচে অধিক আলো সরবরাহ ...

১০০ ওয়াট LED বাল্ব: আলোর ভবিষ্যৎ

  ১০০ ওয়াট LED বাল্ব: আলোর ভবিষ্যৎ ভূমিকা আলো ছাড়া আধুনিক জীবন প্রায় অকল্পনীয়। দিনের পর দিন আমরা আলোর ওপর নির্ভর করে চলি—বাসা থেকে অফিস, রাস্তা থেকে দোকান, হাসপাতাল থেকে শিল্প কারখানা সবকিছুতেই। এক সময় ইনক্যান্ডেসেন্ট ও সিএফএল বাল্ব ব্যবহার হলেও বর্তমানে LED প্রযুক্তি সবার কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে “১০০ ওয়াট LED বাল্ব” হল একটি শক্তিশালী ও কার্যকর আলোর উৎস, যা শক্তি সাশ্রয় এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহারের জন্য বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। LED প্রযুক্তি: মূল ধারণা LED-এর পূর্ণরূপ হল Light Emitting Diode । এটি একটি অর্ধপরিবাহী ডিভাইস যা বিদ্যুৎ প্রবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আলো নিঃসরণ করে। প্রচলিত ফিলামেন্ট বা গ্যাসভিত্তিক প্রযুক্তির চেয়ে এটি অনেক বেশি কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব। ১০০ ওয়াট LED বাল্ব: প্রাথমিক বিবরণ বৈশিষ্ট্য বিবরণ শক্তি ১০০ ওয়াট উজ্জ্বলতা ৮০০০–১০০০০ লুমেন রঙের তাপমাত্রা ২৭০০কে (উষ্ণ সাদা) থেকে ৬৫০০কে (দিনের আলো) আয়ু ২৫,০০০–৫০,০০০ ঘণ্টা ইনপুট ভোল্টেজ সাধারণত ৮৫-২৬৫ ভোল্ট ব্যবহৃত স্থান গুদামঘর, গ্যারেজ, স্টেডিয়াম, শিল্প কারখানা, বড় দোকান, রাস্তার আলো ইত্যাদি LED...